তথ্যানুসন্ধান ডেস্ক: (প্রকাশের তারিখ: 13-Jul-2024)
পশ্চিমবঙ্গে চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোট হয়েছিল গত বুধবার (১০ জুলাই)। শনিবার (১৩ জুলাই) ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবার বড় ব্যবধানে তৃণমূল কংগ্রেস জয় পেয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়ে বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ, রায়গঞ্জ কেন্দ্রটি বিজেপির দখলে ছিল। একমাত্র কলকাতার মানিকতলা কেন্দ্র ছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে।
শনিবার ভোট গণনা শুরু হতেই এই চারটি কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন সকাল থেকেই কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই ভোট গননা শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিধানসভা উপনির্বাচনে ফের ঘাসফুলের ঝড় বইতে শুরু করে। ৪ বিধানসভা আসনেই বড় ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে তৃৃণমূল।
রায়গঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী ৪৯ হাজার ৫৩৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন। এই কেন্দ্রটি এতদিন বিজেপির দখলে ছিল। এবার উপনির্বাচনে রায়গঞ্জ কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করলো।
এবার উপনির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা কেন্দ্রে আলাদা নজর ছিল। ওই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী বিনয় কুমার বিশ্বাসকে ৩৩ হাজার ৪৬৪টি ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মধুপর্না ঠাকুর। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রটি বিজেপির দখলে ছিল। চলতি বিধানসভার উপনির্বাচনে আসনটি তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের দখলে নিয়েছে। ফলে ১৩ বছর পর বাগদা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হলো।
সকাল থেকেই বাগদা কেন্দ্রে ভোট গননার শুরুতেই টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের সংসদ সদস্য শান্তনু ঠাকুর গণনা কেন্দ্রের সামনে হাজির হন। এর ফলে গণনা কেন্দ্রের বাইরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রীকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়। তাকে জানানো হয় যে, গণনাকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে থাকা যাবে না।
রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রটি ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির দখলে ছিল। চলতি বিধানসভা উপনির্বাচনে ওই কেন্দ্রটি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মুকুটমনি অধিকারী বড় ব্যবধানে জয় লাভ করেন। বিজেপির প্রার্থী মনোজ কুমার বিশ্বাসের চেয়ে ৩৮ হাজার ৬১৮টি ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করে মুকুটমণি অধিকারী।
গতবারের উপনির্বাচনে কলকাতার মানিকতলা কেন্দ্রটি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল। এবার চলতি বিধানসভা উপনির্বাচনে মানিকতলা কেন্দ্রে তৃণমূলের কংগ্রেসের প্রার্থী সুপ্তি পান্ডে প্রায় ৫০ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন।
এই চার বিধানসভার উপনির্বাচনে ৩৪ জন প্রার্থী লড়াই করেছেন। বুথের সংখ্যা ছি ১০৯৭টি। এর মধ্যে কলকাতার মানিকতলায় ২৭৭টি বুথ, বাগদায় ৩০১টি, রায়গঞ্জে ২১২ট এবং রানাঘাট-দক্ষিণে ৩০৭টি।
রায়গঞ্জ, মানিকতলা ও রানাঘাট-দক্ষিণে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ও কংগ্রেসের-বাম জোটের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে। অন্যদিকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা বিধানসভায় চতুর্মুখী লড়াই হচ্ছে। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, কংগ্রেস ও ফরোয়ার্ড ব্লক আলাদা করে লড়াই করছে।
লোকসভা নির্বাচনে পর একচেটিয়া দাপট দেখালো তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস ঠিক একইভাবে বিধানসভা উপনির্বাচনে চার আসনে জয়ের জন্য সর্ব শক্তি দিয়ে লড়াই করেছে তৃনমূল। আর সেই লড়াইয়ে তারা সফলও হয়েছে।